পেকুয়ায় কাচা সড়কে পরিনত হয়েছে রাজাখালী ইউনিয়নের দরবার সড়ক। সবুজবাজার থেকে বকশিয়াঘোনার টেক পর্যন্ত ওই জনগুরুত্বপুর্ন সড়কটি বর্তমানে মরন ফাদে পরিনত হয়েছে। গত দেড় যুগ আগে রাজাখালী ইউনিয়নের সবচেয়ে ব্যস্ততম এ সড়কটির সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করা হয়। সবুজবাজার থেকে সর্ব পশ্চিম কুতুবদিয়া চ্যানেল সংশ্লিষ্ট বেঁিড়বাধ পর্যন্ত প্রায় ৫কি.মি ব্রিক সলিং দ্ধারা সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। মধ্য ও পশ্চিম রাজাখালীর সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার অধিক সুগম করতে ১৯৯৮সালে এলজিইডি সড়কটি সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করে।
উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেম ও বুজুর্গানেদ্বিন কুতুবদিয়ার শাহ আব্দুল মালেক (মালেক শাহ হুজুরের) নাম করন করে ওই সড়কটির যুগপৎ সুচিত হয়েছে। রাজাখালীর ভোলা নদীর উত্তর অংশে এক সময় জেটিঘাট ছিল। ওই ঘাট দিয়ে কুতুবদিয়া চ্যানেল পাড়ি দিয়ে কুতুবদিয়ার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার অন্যতম মাধ্যম ছিল এ পয়েন্টটি। ঠিক এর বিপরীত পাশ্বে কুতুবদিয়ায় লেমশিখালী ইউনিয়নে দরবার ঘাটের অবস্থান। যাতায়তের জন্য এ সড়কটির নাম করন করা হয় দরবার সড়ক। কিন্তু কালের পরিক্রমায় অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন ওই সড়কটি আজ ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে পৌঁছেছে। ইট নেই সড়কে। বিপুল অংশ পরিনত হয়েছে কাচা সড়কে। সবুজ বাজারের পশ্চিম প্রান্তে মৌলভীপাড়া টেক থেকে চড়িপাড়া গরম পর্যন্ত প্রায় এক কি.মিটারে সড়ক থেকে ইট সম্পুর্ন উঠে গেছে।
সড়কটির উচ্চতা হ্রাস পাওয়ায় গত কয়েক বছর ধরে বর্ষার সময় পানিতে তলিয়ে যায়। এতে করে সড়কের দু’পাশ বিধ্বস্থ হয়ে ওই এক কি.মি কাচা সড়কে পরিনত হয়েছে। গত বছর শুষ্ক মৌসুমে লবন চাষিরা পায়ে হাটার জন্য নিজেদের অর্থয়ানে এ এক কি.মিটারে মাটি ভরাট কাজ সম্পন্ন করেন। অপরদিকে চড়িপাড়া থেকে বকশিয়াঘোনা টেক পর্যন্ত প্রায় আড়াই কি.মি ইট থাকলেও সড়কটির বিপুল অংশ খানা খন্দকে ভরপুর হয়েছে। বকশিয়াঘোনার তিন রাস্তার মোড় থেকে পশ্চিমের বেঁড়িবাধ পর্যন্ত প্রায় আঁধা কি.মিটারে সড়কটি সরু হয়ে গেছে। দু’পাশ বিলিন হয়ে ইটগুলো সড়ক থেকে সরে গেছে। গত দু’বছর আগে স্থানীয় কিছু উদ্যমী যুবক ও শিক্ষার্থীরা সড়কের অস্থিত্ব রক্ষার জন্য এগিয়ে আসে। তারা নিজেরাই প্রায় দু’কি.মি প্রশস্থ কাজে নিজেদের সম্পৃক্ত করেন। বামলারপাড়ার রাস্তার মাথা থেকে বদিউদ্দিন পাড়ার রাস্তার মাথা পর্যন্ত আঁধা কি.মিটারে সড়কটি অবস্থা আরো নাজুক।
অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক মুক্তিযুদ্ধা মো.হোসেন, ইউনিয়ন যুবলীগ সম্পাদক ও ব্যবসায়ী আনছারুল ইসলাম টিপু, পোনা ব্যবসায়ী রেজাউল করিম, সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান নুরুল আবছার বদু, ইউপি সদস্য মো. নুরুল আলম, ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান জানায় আমরা চরম দুর্ভোগে পড়েছি। বর্তমানে সড়কটির কারনে রাজাখালী ইউনিয়নের বকশিয়াঘোনা, দক্ষিন সুন্দরীপাড়া, চড়িপাড়া, বদিউদ্দিন পাড়া, মৌলভীপাড়াসহ বিপুল অংশের লোকজনের মাঝে জনদুর্ভোগ বেড়ে গেছে। যান চলাচল সম্পুর্ন বন্ধ রয়েছে। বৃষ্টি ও বৈরি আবহাওয়ায় সড়কটি পিচ্ছিল হয়ে যায়। এতে করে পায়ে হাটাও দুস্কর হয়েছে।
শিক্ষার্থী এটিএম মোস্তফা কামাল, আবুল কাসেম, আলমগীর, রুনা আক্তার বাপ্পি, শাকিলা জান্নাত, খালেদা বেগম, সাইফুল ইসলাম, মাহমুদুল করিম জানায় আমরা নিয়মিত স্কুল, কলেজে যেতে কষ্ট হচ্ছে। সড়কটির অবস্থা এতো খারাপ যে পায়ে হেটেও কোথাও যাওয়া যাচ্ছেনা। বৃষ্টি হলে চলাফেরা একদম বন্ধ হয়ে যায়। এক সময় এ সড়ক দিয়ে নিয়মিত গাড়ি চলত। ইট উঠে গিয়ে কাচা সড়কে পরিনত হয়েছে। এখন আর গাড়ি চলেনা।
ইউপি চেয়ারম্যান ছৈয়দ নুর জানায় সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন। কিন্তু দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় এটির অস্থিত্ব হুমকির মধ্যে পড়েছে। অথচ এয়ার আলী খান আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, এয়ার আলী খান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাজাখালী ইউপি কার্যালয়, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র, পুলিশ ফাঁড়ি, সবুজবাজার এর সাথে যোগাযোগর একমাত্র মাধ্যম ওই সড়কটি। উল্লেখিত গ্রামগুলোর মানুষের যাতায়ত ও দৈনন্দিন কার্যক্রমের সাথে সড়কটির নিবীড় সম্পর্ক। বিকল্প কোন ধরনের নেই সড়ক। এর অবস্থা দিন দিন নাজুক ও বেহাল হওয়ায় এসব এলাকার মানুষগুলো যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক প্রকার অবরুদ্ধ হয়েছে।
এলজিইডি পেকুয়ার প্রকৌশল জাহেদুল আলম চৌধুরী জানায় সড়কটির বাস্তবায়ন কাজ চলছে। সবুজ বাজার থেকে মৌলভী পাড়া পর্যন্ত পিচ ঢালাই হচ্ছে। পরবর্তী বরাদ্ধ পেলে ক্রমান্বয়ে সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করা হবে।
পাঠকের মতামত: